একজন ব্যতিক্রমী ছাত্র নেতার গল্প !
সরল ও স্বচ্ছ রাজনীতির যার ব্রত মুখে হাসি লেগেই থাকে সবসময় , নিজেকে অন্যের কাছে প্রকাশ করার সহজ সরল ভঙ্গি এবং সর্বোপরি স্বচ্ছ রাজনীতি যার এক মাত্র ব্রত। নাম দিয়াজ ইরফান চৌধুরী। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। যার সাথে তিনি কথা বলুক না কেন অতি অল্পতে আপন করে নেয়ার ক্ষমতা তার। শুধু ব্যক্তিগত এই সব গুণ নয় আছে সাংগঠনিক দক্ষতা। নিজগুণে তিনি সাবেক কমিটির যুগ্ম সম্পাদকের পদটি দখলে নিয়ে ছিলেন। শিক্ষা জীবনে যেমন ছিলেন মেধাবী রাজনৈতিক জীবনেও তিনি সফল। যার প্রমাণ নব গঠিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক পদ। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের এর আগের কমিটিতে তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য হয়েছিলেন। শিক্ষা জীবনের শুরুতে প্রথম পরীক্ষা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) স্কুলে। প্রথম শ্রেণী ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় চতুর্থ স্থান দখল করেন।
ছিলেন স্কাউটিং এর সাথে সম্পৃক্ত, ২০০২ সালে হাটহাজারী উপজেলায় চিটাগং ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি কর্তৃক আয়োজিত Promotional Debate Programme অংশ নিয়ে চবি স্কুল চ্যাম্পিয়ান হন এবং তিনি নির্বাচিত হন শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক, ২০০৩ সালে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়া কর্মসূচীতে চট্টগ্রাম জোন থেকে প্রথম স্থান অধিকার করেন। পান বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রীয় পুরস্কার, ২০০৪ সালে এসএসসিতে সমগ্র বাংলাদেশে বাণিজ্য বিভাগ হতে জিপিএ ৫ পান মাত্র ৯২১ জন, তিনি সে সময় চবি স্কুল থেকে বাণিজ্য বিভাগ হতে জিপিএ ৫ পান। এরপর ভর্তি হন ঢাকার বিখ্যাত নটরডেম কলেজে। কিন্তু ঘরের বড় ছেলে হওয়ার কারণে তার মায়ের ইচ্ছায় ৬ মাস নটরডেম কলেজে পড়ার পর পুনরায় ভর্তি হন চবি কলেজে। চবি কলেজের হয়ে তিনি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন বিতর্ক প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করেন। ২০০৫ সালে তিনি পুনরায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রীয় পুরস্কার লাভ করেন। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইতিহাসে যে অল্প কজন ২ বার এই পুরস্কার পেয়েছেন তাদের মধ্যে তিনি একজন। ২০০৬ সালে বাণিজ্য বিভাগ হতে ৪.৭০ পেয়ে এইচ এস সি পাশ করে। কলেজ জীবন শেষ করে ভর্তি হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগে। উক্ত বিভাগ থেকে তিনি প্রথম শ্রেণীতে বিবিএ ও এমবিএ ডিগ্রী লাভ করেন। এরপর উচ্চ গবেষণার জন্য এম ফিলে ভর্তি হন, মেধার প্রমান রেখেছেন বিসিএস পরীক্ষায়। ৩৪তম বিসিএস এ ভাইভা দিয়েছিলেন তিনি। ছিলেন চিটাগং ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির (সিইউডিএস) সদস্য। সিইউডিএস’র পক্ষ থেকে একাধিকবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, চুয়েট, চাঁদপুর, সিলেটে বিতর্ক প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করেন। একাধিকবার রেডিও বিতর্ক ও ২ বার টিভি বিতর্কেও অংশগ্রহন করেন। ২০০৯ সালে শাহজালাল হলের পক্ষ হয়ে টিভি বিতর্কে অংশগ্রহণ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আল বিরুনি হলকে হারিয়ে সেমি ফাইনালে উঠেছিলেন।
নিজের সম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন ম্যাগাজিন, জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে তার একাধিক কলাম, চবিতে সাংস্কৃতিক আন্দোলেনর প্রাণস্পন্দন ছিলেন তিনি। তার একান্ত চেষ্টায় গড়ে তোলেন সামাজিক সংগঠন ‘বাংলার মুখ’। বাংলার মুখ থেকে তিনি আয়োজন করেন ক্যাম্পাসে ব্যাতিক্রমধর্মী শীতকালীন পিঠা উৎসব,যা সেসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দিপনার সৃষ্টি করেছিলো,আয়োজন করেছিলেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান,শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন,দেয়ালিকা প্রকাশসহ বিভিন্ন কর্মসূচীর ।
তার নেতৃত্ব সংগঠিত হয়েছিলো চবির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ছাত্র আন্দোলন। বিশ্ববিদ্যালয়ে চলাচলরত মিনিবাস ( তরী) এর ধাক্কায় এক ছাত্র মারা গেলে নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান ও ছাত্রবাস চালুর দাবিতে তিনি গড়ে তুলেন বিশাল ছাত্র আন্দোলন । যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গড়ে উঠা আন্দোলনে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও চবিতে নেতৃত্বে দিয়েছিলেন। তার বাবা মো: ছরওয়ার কামাল চৌধুরী ও নানা আলহাজ্ব এটিএম নুরুল আমিন চৌধুরী দুজনেই ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ১ সেক্টরে তার বাবা সম্মুখ সমর যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছিলেন,তিনি নিজেও ছিলেন আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান,চবি শাখার সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব। তার মাতা জাহেদা আমিন চৌধুরী চট্টগ্রাম উত্তর জেলা পেশাজীবী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন । বহু চড়াই উতরাই পেরিয়ে বর্তমানে তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক। সজ্জন ও বন্ধুবৎসল, সবসময় হাসি মাখা মুখ, তার সফলতায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক এবং বর্তমান নেতারা।



Leave a Reply