ঢাকা বিশ্ববিদ্যালের পর প্রথম পছন্দে কোন বিশ্ববিদ্যালয় রাখা উচিত?
বাংলাদেশের প্রথম সারির সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় বললেই যেগুলো আমাদের মাথায় আসে সেগুলো হলো: ঢাবি,জাবি,রাবি,চবি।
এখন আমরা অনেকেই সিদ্ধান্তহীন হয়ে যাই,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর কোন বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রথম পছন্দে রাখা যায়৷ আজকের আলোচনা মূলত উক্ত বিষয় নিয়ে। প্রথমেই বলে রাখছি,আজকের আলোচনা সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে। বাংলাদেশের শুধুমাত্র চারটি পূর্ণ-স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে সেগুলো হলো ঢাবি,জাবি,রাবি এবং চবি। অন্য সকল সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণ-স্বায়ত্তশাসিত নয়৷ কোন না কোন ভাবে তৃতীয় পক্ষের কাছে দায়বদ্ধ। কিন্তু এই চারটি বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণ স্বাধীন। তাদের উপর তৃতীয় পক্ষের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই।
তাই ক্ষমতার মানদন্ডে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনটি পিছিয়ে নেই। কিন্তু মুরব্বিদের একটা আলাদা মর্যাদা থাকে,সকলেই তাকে সম্মান করে; তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা আলাদা কদর সবজায়গায় রয়েছে। অন্যদিকে রাজধানী শহরে অবস্থিত হওয়াতে তাদের প্রচার-প্রচারণা খুবই ভালো এবং দেশের যেকোন সংকটাপন্ন মুহূর্তে তারাই সবচেয়ে বেশি নজর কাড়তে পারে।
এবার আসা যাক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর কোন বিশ্ববিদ্যালয় সেরা এই প্রশ্নে…
বাকি তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলোই বাংলাদেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে স্ব স্ব ঐতিহ্য,উচ্চশিক্ষিত এবং নামকরা শিক্ষক,পাঠদানের পদ্ধতি বিবেচনায় একটি আরেকটির চেয়ে কোন অংশে কম নয়। সকলেই সর্বেসর্বা। তাই কোনটির শিক্ষার মান নয়; পারিপার্শ্বিক দিক বিবেচনায় যেটি সেরা সেটিই হোক ঢাবির পর প্রথম পছন্দ।
বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম,ঢাকার পর বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নগরী চট্টগ্রাম৷ বরং শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে কর্পোরেট কোম্পানি সব দিক থেকেই এগিয়ে চট্টগ্রাম। বিশাল একটি জনসংখ্যার বসবাস এখানে। তাছাড়া এটি কে বাংলাদেশের প্রবেশদ্বার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর সবচেয়ে বেশি নজর কারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়৷ বাণিজ্যিক রাজধানী হওয়ায় এখানে অসংখ্য মানুষের বসবাস,তাই টিউশন খুব সহজেই পাওয়া যায়। যা একজন শিক্ষার্থী কে নিজের খরচ নিজে চালিয়ে পড়ালেখা করার সুযোগ দেয়। তাছাড়া অনেক শিল্পকারখানা এখানে রয়েছে,চবিয়ান হিসেবে এখানে আপনি যতটুকু অগ্রাধিকার পাবেন অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ততটা পাবেন না। যেটি চাকুরী দৌড়ে আপনাকে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখবে। তাছাড়া আপনারা হয়তো জানেন, বাংলাদেশের শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির প্রধান নির্বাহীদের তালিকায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আছে ৯%। যা কোন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবস্থানে দ্বিতীয় (প্রথম ঢাবি,তৃতীয় বুয়েটে)। তাছাড়া বাংলাদেশের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম হওয়ায় এর প্রাক্তন শিক্ষার্থী পাওয়া যাবে না এমন কোন জায়গা নেই আর সিনিয়র যদি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র,সুবিধাতো কিছু অতিরিক্ত পাবেনই ;)। তাছাড়া এর বিশাল সীটসংখ্যা আপনার স্বপ্নপূরণে আপনাকে এগিয়ে রাখবে। যারা রেলগাড়ি পছন্দ করেন তাদের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ই একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যার রয়েছে শিক্ষার্থী পরিবহনের জন্য নিজস্ব ট্রেন ব্যবস্থা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের পূর্নাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় এর সীট সংখ্যা অপ্রতুল তাছাড়া একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে ছাত্র-ছাত্রী সিট সংখ্যা আলাদা; এতে যা আছে তাও চাহিদার তুলনায় অত্যন্ত কম।
তাই ঢাবির পর চবিই হতে পারে তোমার প্রথম পছন্দ।
সর্বোপরি, জাবি/রাবি/চবি তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়। তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিঃসন্দেহে সেরা এবং কখনোই একটির সাথে অন্যটিকে তুলনা করার মতো অবস্থানে নয়। কারন,তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়েরই রয়েছে স্ব স্ব পাঠদান পদ্ধতি এবং অসংখ্য উচ্চশিক্ষিত স্কলার যারা এগুলোতে পাঠদান করেন। তাই এই তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে তুলনা করা নেহাতই বোকামি।
শুভকামনা ♥
আল আহসান শুভ্র

Leave a Reply